আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ১০ বছরে নেপালে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। যা দেশটির জীববৈচিত্রের জন্য সুখবর। কারণ, একটা সময় নেপালে বাঘ প্রায় বিলুপ্তির পথে ছিল।
এদিকে, বাঘের এই সংখ্যাবৃদ্ধিতে আনন্দের পাশাপাশি উদ্বেগও বেড়েছে নেপালে। কেননা, সেখানে নিয়মিত বাঘের হামলার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ১২ মাসে নেপালে বাঘের আক্রমণে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের পাঁচ বছরে সব মিলিয়ে এ সংখ্যা ছিল ১০।
বাঘ রক্ষার একটি সংগঠনের নেতা আয়ুশ জং বাহাদুর রানা। এক ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বাঘের মুখোমুখি হলে দুই রকমের অনুভূতি হয়। একটি হচ্ছে, কী অসাধারণ সৃষ্টি এই জীবটি! আর অন্যটি হচ্ছে, এই বুঝি এবার আমার প্রাণ গেল!
নেপালের তরাই অঞ্চলের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সুরক্ষিত জাতীয় উদ্যান হলো বারদিয়ার সমভূমি এবং ঘন ঝোপ। সেখানেই সশস্ত্র টহল দেন বাঘরক্ষা সংগঠনের নেতা আয়ুশ জং বাহাদুর রানা। প্রায় সময়ই বাঘের সামনাসামনি হতে হয় তাকে।
বাঘ রক্ষায় ‘জিরো-পোচিং’ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে নেপাল, যে কাজেও এসেছে। দেশটির সামরিক বাহিনীও জাতীয় উদ্যানে বাঘ রক্ষায় কাজ করা এই ধরনের দলগুলোকে সহায়তা করে। অ্যান্টি-পোচিং ইউনিটগুলো অভয়ারণ্যের প্রবেশদ্বারগুলো পর্যবেক্ষণ করে। যে কারণে বাঘ সেখানে নিরাপদে ঘোরাফেরা করতে পারে।
উদ্যানের একটি অংশ ‘খাতা করিডর’ নামে পরিচিত। এটি বারদিয়া জাতীয় উদ্যানকে ভারতীয় সীমান্তের কাতারনিয়াঘাট বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। কিন্তু ওই এলাকা দিয়ে বাঘের চলাচল উদ্যানের সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।
গ্রামবাসী গবাদিপশু চরাতে বা ফল, মাশরুম এবং কাঠ সংগ্রহ করতে জাতীয় উদ্যান বা অভয়ারণ্যে অবস্থান করার সময় বেশির ভাগ হামলার শিকার হয়েছেন। অনেক সময় দেখা গেছে, বাঘ উদ্যান থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হামলা চালিয়েছে। এসব গ্রামে বন্য প্রাণী প্রবেশে বাধার জন্য বেড়া দেওয়া হলেও তা খুব একটা কাজে আসেনি।