ওয়েব ডেস্ক: পথচারীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা, সবার জন্য প্রবেশগম্য মাঠ-পার্ক নিশ্চিতকরণ, বিদ্যালয়ভিত্তিক অঞ্চল ধারণা বাস্তবায়ন, এলাকাভিত্তিক সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত ঢাকা শহর গড়ে তোলা সম্ভব।
বেসরকারি সংস্থাসমূহ ঢাকা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) বাস্তবায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাই বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে নিয়মিত অ্যাডভোকেসি ও স্বল্প-মধ্য-দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রমের মাধ্যমে ড্যাপ বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে।
বুধবার (১৫ মার্চ) ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের কৈবত সভাকক্ষে সংস্থার উদ্যোগে ‘ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা : বসবাসযোগ্য নগর নিশ্চিতে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না বলেন, বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যে সকল উপাদান প্রয়োজন, সেগুলোর বিষয়ে সরকারের একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। সম্প্রতি লক্ষ্য করেছি, ঢাকা শহরে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের অ্যাডভোকেসি, সামাজিক আন্দোলন চলমান রাখতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম বলেন, হকার উচ্ছেদ বা পুনর্বাসন কোনো সমাধান নয়, বরং হকার ব্যবস্থাপনা জরুরি। ফুটপাতে হেঁটে যাতায়াতের পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিটি ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে কোন ধরণের পরিবর্তন প্রয়োজন, কতটুকু মাপের বসার ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে, কোন গাছ উপযোগী এসব বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা ও নকশা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদিয়া আফরোজ বলেন, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কমিউনিটি স্পেস তৈরির বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা রাখা প্রয়োজন। রাজউকের থেকে ভবনের অনুমোদন নেওয়ার ক্ষেত্রে এটি অবশ্য পালনীয় একটি শর্ত হতে হবে। সেই সঙ্গে পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে একদিকে যেমন চালকদের সচেতন হতে হবে, তেমনি পথচারীদেরও আইন মেনে চলার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হতে হবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, ঢাকা শহরে বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ড্যাপে বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে এবং যান্ত্রিক বাহনের ব্যবহার কমিয়ে পথচারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। ঢাকা শহরে ৬০ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে হেঁটে যাতায়াত করে। শহরের মাত্র ৫ শতাংশ মানুষের ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। ন্যায়সঙ্গত শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার।