ওয়েব ডেস্ক: গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত রাখতে সব দলকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু।
তিনি বলেন, রাজপথে সংঘাত, সহিংসতা না করে সংসদে গিয়ে জনগণের জন্য কথা বলতে হবে। নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। আমরা সব দলকে সংসদে নিয়েই কাজ করতে চাই।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডেপুটি স্পিকার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামটা শুনলেই বোঝা যায়, আমাদের কী করণীয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারিবারিকভাবেই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বড় হয়েছেন। এর কারণ জানতে আগে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে জানতে হবে।
ডেপুটি স্পিকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা শেখ হাসিনার মধ্যে গ্রথিত হয়েছে বলেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন।
‘এ দেশ স্বাধীন করেছে সব ধর্মের মানুষ। তাই ধর্মান্ধতার বিভ্রান্তি থেকে আমাদের মুক্ত থাকতে হবে।’
এসময় আলোচনা সভার প্রধান বক্তা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পরাজিত পাকিস্তানি শক্তির সীমাহীন উল্লাস দেখেছি। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, জাতীয় চার নেতাকেও তারা হত্যা করেছে। দেশকে নিয়ে গেছে অন্ধকারের দিকে।
‘১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফিরে সে অন্ধকার দূর করেছেন। তিনি শুধু দলের হালই ধরেননি, জাতিকে দিয়েছেন দিশা। দেশকে নিয়ে গেছেন উন্নয়নের পথে। বারবার প্রাণনাশের হুমকি ও চেষ্টা করা হলেও তিনি দমে যাননি।’
তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি এখনো সক্রিয়। তারা দেশ ও দেশের বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা যেন গণতন্ত্রের পথ বন্ধ করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
‘শুভ জন্মদিন তিমির হননের নেত্রী’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সভার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীকে তিমির হননের নেত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করেন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। প্রখ্যাত সাংবাদিক তোয়াব খানের একটি লেখায় শেখ হাসিনাকে তিমির হননের নেত্রী বলা হয়েছে। আমরা অনুমতি নিয়ে সেটি ব্যবহার করেছি। কারণ, এর সঙ্গে আমরা পুরোপুরি একমত।
‘শেখ হাসিনা শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যা হিসেবে জাতিকে নেতৃত্ব দেননি, তিনি অন্ধকার গহ্বরে তলিয়ে যাওয়া থেকে একটি জাতিকে উদ্ধার করেছেন। ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, সেখান থেকে তিনি দেশ, দেশের মানুষ ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন।
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রীতিমতো লড়াই করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি যদি ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের ভাঙা তরীর হাল না ধরতেন, তবে দেশের কী অবস্থা হতো তা ভাবাও যায় না। জন্মদিনে সম্প্রীতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাই ও তার দীর্ঘায়ু কামনা করি।
আসন্ন দুর্গাপূজা উদযাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গাপূজা পালন করেন। কিন্তু আবহমান কাল থেকেই এ উৎসবে যোগ দেন সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ। এটি বাঙালির উৎসব। সবাই মিলে শান্তিপূর্ণভাবে যাতে এ উৎসব পালন করা যায়, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। কোনো অপশক্তি যেন আমাদের এ সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্যসচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অংশ নেন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক সাদেকা হালিম।
আরও উপস্থিত ছিলেন ড. উত্তম বড়ুয়া, ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক বিমান বড়ুয়া, জেষ্ঠ্য সাংবাদিক শরীফ সাহাবউদ্দীন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মাহবুববুর রহমান বাবু, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম।