ওয়েব ডেস্ক: বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বলেছেন, বর্তমান সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুতের ৪০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন করতে চান। বিদ্যুৎ বিভাগ সে লক্ষ্যে কাজ করছে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস থেকে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর ব্রাক ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিকাল ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিদ্যুৎ সচিব বলেন, আমরা আগামী এক বছরের মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ থেকে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছি। বেশ কয়েকটি ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে এখন ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। বিভিন্ন বাসাবাড়ি, অফিস ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এমন একটি সময়ে এই কনফারেন্সটির আয়োজন করা হলো যখন পুরো পৃথিবী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করছে। প্রতিটি দেশ তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কাজ করছে। আমরাও সে লক্ষ্যে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিদ্যুৎ বিভাগ নানাধরনের পদক্ষেপগ্রহণ করে এসেছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশর বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪৯৪২ মেগাওয়াট। বর্তমানে আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট। ২০৪১ সালের মধ্যে সুলভমূল্যে সবার কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে ক্রস বর্ডারের আওতায় ভারত থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছি। ডিস্ট্রিবিউশন লসের পরিমাণ কমেছে ৭.৭৪ শতাংশ। দেশজুড়ে ১৩,৮৮৯ কিলোমিটার পরিমাণ সঞ্চালন লাইন স্থাপিত করা হয়েছে।
হাবিবুর রহমান বলেন, গাইবান্ধায় অবস্থিত ২০০ মেগাওয়াট সোলার প্যানেল চলতি বছরের ডিসেম্বরে চালু হবে।
বায়ুবিদ্যুৎ নিয়েও আমরা কাজ করছি। তিনটি নতুন বায়ুবিদ্যুৎ প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। যেখান থেকে বছরে ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এছাড়া শহরের বর্জ্য থেকে ৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারপার্সন তামারা হাসান আবেদ ও ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ভিনসেন্ট চ্যাং।
তিন দিনব্যাপী এ কনফারেন্সে দেশ ও দেশের বাইরের অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞরা বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সংক্রান্ত বিষয়ে প্যানেলে আলোচনাসহ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। কনফারেন্সে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও গবেষকরা আন্তর্জাতিক বাজার, গ্যাস, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ বিষয়ক নেটওয়ার্ক অপারেশন ম্যানেজমেন্ট, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বাণিজ্য, প্রকল্প পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করবেন।