জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি: দুই বছর পর আবারও বাংলা নববর্ষে হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা। মহামারির গ্লানি ভুলে সুসময়ের বার্তা দিলো এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল ‘নির্মল করো, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক ছাত্রকেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে থেকে বের হয় শোভাযাত্রাটি। ‘নির্মল করো, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ প্রতিপাদ্যে বের হওয়া শোভাযাত্রার গন্তব্য ছিল ঢাবি ভিসির বাসভবন। ভিসির বাসভবনের সামনে স্মৃতি চিরন্তন ঘুরে শোভাযাত্রাটি আবার টিএসসিতে ফিরে যায়।।
শোভাযাত্রা ঘিরে ছিল পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।মোটরসাইকেলে র্যাবের একটি দল ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রার অগ্রভাগে। তাদের পেছনে ছিলেন ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর ছিলেন পুলিশের সোয়াত টিম, পুলিশ ও ডিবির সদস্যরা। তাঁদের পেছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, সহ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ ও এ এস এম মাকসুদ কামাল, চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন, চারুশিল্পী সংসদের নেতা কামাল পাশা চৌধুরীর নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় ছিলেন বিপুলসংখ্যক মানুষ। শোভাযাত্রার পেছনে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রবেশপথগুলোতে ছিল তল্লাশিচৌকি। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও ছিল বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।
মুখোশ, টেপাপুতুল, মাছ–পাখির প্রতিকৃতিসহ লোকসংস্কৃতির নানা উপাদান ছিল এবারের শোভাযাত্রায়। শোভাযাত্রা শেষে টিএসসিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘নতুন বছরে প্রত্যাশা থাকবে, আমাদের উন্নয়নের ধারা যেন চলমান থাকে। মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটে। মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় হোক। সবাইকে শুভ নববর্ষ।’ শোভাযাত্রা নির্বিঘ্নে শেষ হওয়ায় এ সময় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
৮০ এর দশকে সামরিক শাসনের শেকল ভাঙার আহ্বানে বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে চারুকলা থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। পরে তা মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম ধারণ করে। ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতিও পায় এই কর্মসূচি।