সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য নিউজিল্যান্ড সফর যাবেন না সাকিব আল হাসান। পারিবারিক কারণ দেখিয়ে ছুটি পেয়েছেন আগেই। পরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন দেশ তথা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সেটার কারণ আইপিএল। দেশের খেলার চেয়ে আইপিএলকে বেশি প্রাধান্য দিলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আটকায়নি সাকিবকে।
দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পারফরমার ছাড়া পরপর দুটি সিরিজ খেলতে হবে। নিউজিল্যান্ড সফরের ছুটিটা না হয় ব্যক্তিগত দরকারে। আইপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের জন্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট সিরিজকেও ‘না’ বলে দিলেন সাকিব? এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি কি বিব্রত?
নাহ, নাজমুল হাসান পাপন প্রকাশ্যেই বলেছেন, সাকিব ইস্যুতে তিনি বিব্রত নন। তবে তার মুখ থেকেই বেরিয়ে এসেছে, ব্যাপারটা নিয়ে মন খারাপ তার। আজ (সোমবার) পড়ন্ত বিকেলে শেরে বাংলায় উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপে পাপন বলেন, ‘এখানে বিব্রত বলাটা ঠিক হবে না। বিব্রত ঠিক না, তবে মন খারাপ। আমাকে যদি বলেন, আমার মন খারাপ।’
কেন বোর্ড সভাপতির মন খারাপ? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন পাপন। অনেক কথার ভিড়ে কিছু নির্জলা সত্যও বলেছেন বিসিবি প্রধান। সেই কথোপকথনে পরিষ্কার হয়েছে, সাকিবকে আইপিএল খেলার অনুমতি দিলেও ভেতরে ভেতরে বেশ মনোক্ষুণ্ন পাপন। তার কথায় অসন্তুষ্টি অনেকটাই বেরিয়ে এল।
পাপন বলেন, ‘দেখেন, একটা খেলোয়াড়ের পেছনে কম ইনভেস্ট করি না। বোর্ড ১০-১৫ বছরে ধরে যে ইনভেস্টমেন্ট করে, এটা আপনাদের সবকিছু জানা আছে কিনা তাও জানি না। একটা তো হচ্ছে খেলাধুলা, লিমিটেড চুক্তি। চুক্তির বাইরে ইনজুরি হলেও কিন্তু আমরা দেখি। সবকিছু নিয়ে আমরা ওদের যে সুযোগটা এখন দেই, সেটা আগে কখনও চিন্তাই করা যেত না।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজই নয়। তার আগে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারতের বিপক্ষে টেস্টের ফলও যাচ্ছেতাই ছিল। তাই সদ্য সমাপ্ত সিরিজটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মানতে নারাজ পাপন।
টেস্টে টানা হারের মধ্যে থাকার সময়টায় দলের দায়িত্বশীল খেলোয়াড়রা ভরসা দেবেন, সামনের সিরিজটায় ভালো করার উপায় বের করবেন, এমনটাই আশা করেছিলেন পাপন। কিন্তু সাকিবের সিদ্ধান্তে তিনি রীতিমত হতাশ।
খানিকটা ক্ষোভের সাথে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এই জায়গায় দল এরকম দুইটা টেস্ট ম্যাচ হারার পরে আমাকে যদি বলেন, এই দুইটার কথা। হার তো শুধু দুইটা না, আমরা টেস্ট ম্যাচ হেরে এসেছি আফগানিস্তান-পাকিস্তানের সঙ্গে, ভারতের সঙ্গে। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে নিজেদের মাটিতে পর পর দুই টেস্টে হারলাম। এরপরে কেউ যদি বলে আমি পরবর্তী টেস্টটা না খেলি! আমার ধারণা ছিল, সবাই ওঠেপড়ে লাগবে টেস্টটা আমাদের জিততেই হবে। সেই জায়গায় কেউ যদি মনে করে এটা খেলবে না অন্য একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলবে, এরপর আর কিছু বলার থাকে না।’