রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: হাইকোর্টের আদেশে রাঙ্গামাটিতে উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে বাধার মুখেই স্থগিত রয়েছে জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় জেলা শহরের ফিসারিঘাট বাস টার্মিনাল এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা বিনতে আমিনের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। অভিযানের শুরুতে তিনটি দোকান গুড়িয়ে দেওয়ার পর জোরালো ক্ষোভ জানায় স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে এলাকার কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিল জোবায়তুন নাহারও ক্ষমতাসীনের যুবলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বুধবার সকাল ১০টার দিকে এসে মৌখিকভাবে তাদের উচ্ছেদের কথা জানানো হয়েছে। ১২টার দিকে এসে ভাঙা শুরু করেছে। এই অল্প সময়ের মধ্যে তারা কিছুই সরাতে পারেনি। দোকানপাটগুলোর পেছনে স্থানীয়রা পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তারা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় যার। স্থানীয় বাসিন্দা মিজান দাবি করেন, তার নিজের ভূমি নিয়ে মামলা চলমান কিন্তু প্রশাসন বিরোধপূর্ণ জায়গায় উচ্ছেদ চালাচ্ছে।
সদর ইউএনও নাজমা বিনতে আমিন বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের এক আদেশে আমরা উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছি। একটি পিটিশনের উপর হাইকোর্টের দেয়া আদেশের ভিত্তিতে আমরা আদেশ বাস্তবায়ন করছি। যাদের জমির দলিল আছে তাদের দলিল দেখাতে বলেছি। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে আগামী রবিবার উচ্ছেদ মামলার ধার্য তারিখে আপডেট জানাইতে হবে। যদি নতুনভাবে মামলার আদালত থেকে স্থগিত আদেশ নিয়ে আসতে পারে তাহলে পরে মালামাল সরানোর জন্য আদালত সময় দিতে পরে,প্রশাসন কোন অবস্থাতেই সময় দিতে পারবে না। আমরা জলবাসা জায়গায় ১২০ ফুট নীচে ক্ষমন্নয়ে সকল সরকারি জায়গা উচ্ছেদ করা হবে।
এদিকে, ফিসারঘাট টার্মিনালে তিনটি দোকান ভাঙার পরই স্থানীয়রা আরও সংক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউএনও দখলদারদের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করতে বলেন এবং ম্যাজিস্ট্রেটরা বাস টার্মিনাল এলাকা ত্যাগ করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার জেলা শহরের আসামবস্তি বাজার ও ব্রাহ্মণটিলা এলাকায় ৫টি দোকান, ৪টি বসতঘর ও একটি নির্মাণাধীন পাঁকা অবকাঠামো গুড়িয়ে দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর একটি রিটের প্রেক্ষিতে দেশের একমাত্র কৃত্রিম জলাধার রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে অবৈধভাবে দখল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে কাপ্তাই হ্রদে আর যেন কোন মাটি ভরাট বা স্থাপনা নির্মাণ না করা হয় সে ব্যাপারে কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে রাঙ্গামাটির জেলাপ্রশাসক (ডিসি) এবং পুলিশ সুপার (এসপি)সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি অপর এক আদেশে কাপ্তাই হ্রদের জরিপ করে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক কাপ্তাই হ্রদে অবৈধ দখল বন্ধে উচ্ছেদ অভিযান হচ্ছে- এমনটাই জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।#