নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হতে ডাক্তার ও নার্সদের এ্যাপ্রোন, মুখে মাক্স এবং গলায় ভুয়া আইডি কার্ড পরে অভিনব কায়দায় চুরি ও সংঘবদ্ধ পেশাদার চোর চক্রের সক্রিয় ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গুলশান থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুর ১২ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গুলশান বিভাগ পুলিশের উপ-কমিশনার আব্দুল আহাদ বলেন, ঢাকা শহরের গুলশানসহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন ফ্ল্যাটে কখনো ডাক্তার কখনো নার্স পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করে কতিপয় ব্যক্তিরা চুরি করে আসছিল। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সংঘবদ্ধ চক্রটিকে ধরতে গত ৫ এপ্রিল, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগের গুলশান থানা পুলিশ একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান কালে সুকৌশলে অভিনব পন্থায় বাসায় প্রবেশ করে চুরি করা চক্রের অন্যতম প্রধান আসামি আফসানা আক্তার মিম (২২)কে গুলশান থানাধীন এলাকার ২নং পুলিশ চেকপোষ্ট এর সামনে হতে ৯ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করা হয়।
আটক মিম এর দেওয়া তথ্য ও স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে সহযোগী চক্রের আরো ৫ সক্রিয় সদস্য- স্বপন শেখ (৪৫), তন্ময় বিশ্বাস (৩০), মোঃ নুরুল ইসলাম (২৭), মোঃ মোখলেছুর রহমান (৫১), কলিম উদ্দিন কালু ওরফে কলিম উল্লাহ (৪০) দের পরবর্তীতে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় সংঘবদ্ধ পেশাদার চোর চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে চোরাই যাওয়া ০৬টি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১০টি মোবাইল ফোন ও ০২টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুলশান বিভাগ পুলিশের উপ-কমিশনার।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে গুলশান থানাসহ বিভিন্ন থানায় মোট ১৪টি নিয়মিত মামলা ও ২টি সাজাসহ গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল আহাদ আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা পরষ্পরের যোগসাজসে রাজধানী ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় ডাক্তারী এ্যাপ্রোন, মুখে মাক্স এবং গলায় আইডি কার্ড পরে সুকৌশলে অভিনব পন্থায় বাসায় প্রবেশ করে চুরি করতো।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, আফসানা আক্তার এশা ওরফে মিম (২২) গুলশান, নিউমার্কেট, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও থানায় ১ বার করে মোট ৪ বার এবং মোঃ মোখলেছুর রহমান (৫১) তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ১ বার এর আগে গ্রেফতার হয়েছিল।
নগরবাসীকে সতর্ক বার্তা দিয়ে উপ-কমিশনার বলেন, কোনো বাসায় ডাক্তার বা নার্স পরিচয়ে কেউ ঢুকতে চাইলে প্রবেশ করতে দেবেন না। তারা বৈধ পরিচয়ধারী না ছন্মবেশী তা আগে যাচাই করতে হবে। যে কেউ আসুক না কেন পরিচয় নিশ্চিত হয়েই প্রবেশে অনুমতি দেওয়া উচিত। বাসা বা ভবন মালিকদের সেটা নিশ্চিত করতে হবে, দারোয়ান বা ভবনের নিরাপত্তা কর্মীদের তা জানাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর, সহকারী পুলিশ কমিশনার নিয়তি, গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার নিউটন দাস। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বি এম ফরমান আলী ও তদন্ত (ওসি) শাহনুর সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।