রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:দীর্ঘ তিন মাস ২৭ দিন বন্ধের পর সীমিত আকারে খুলে দেয়া হলো রাঙ্গামাটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য ঝুলন্ত সেতুটি। সেতুতে প্রবেশে বাধ্যবাধকতা রয়েছে মাস্ক পরিধানে। মাস্কবিহীন কারো কাছে প্রবেশের টিকিট বিক্রি করছে না কর্তৃপক্ষ। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আরো কড়াকড়ি আরোপের দাবি জানিয়েছেন পর্যটকরা।
এতদিন স্থানীয় লোকজন স্থাস্থ্যবিধি মেনে ঝুলন্ত ব্রীজে বেড়াইতে গেলে কেউ বাধা দেয়নি। পর্যাটক না আসায় সব কিছু বন্দ ছিল । এখন প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে অনেক পর্যাটক আসছে ।
বুধবার ঝুলন্ত সেতুতে আগত কয়েকজন পর্যটক বলেন, করোনার প্রভাবে ঘরবন্দি থেকে জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। ঈদে রাঙ্গামাটিতে এলাম, পর্যটন সেতুটি খোলার কারণে এখানে এলাম। মনে হচ্ছে যেন প্রাণভরে শ্বাস নিতে পারছি।
তবে তাদের অভিযোগ, সেতুতে প্রবেশে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক থাকলেও ভেতরে ঢুকে কিছু মানুষ মাস্ক পরছে না। তাই কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে আরো নজরদারি বাড়ানো উচিত। আর সেতুতে প্রবেশ পথে থার্মাল স্ক্যানার বসিয়ে সুরক্ষা আরো বাড়ানোর দাবি জানান তারা।
ট্যুরিস্টবোট চালক সহিদ বলেন, টানা চারমাস ধরেই আমাদের চালক-সহকারীরা অবসরে ছিলেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে কষ্টে জীবিকানির্বাহ করেছি । এখন পর্যটন খোলার কারণে যদি পর্যটক আসে তাহলে হয়ত এই দুর্ভোগের সময়টা কেটে যাবে।
তারা জানান, সোমবার ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশাধিকার চালুর পর এক বিকালেই ২৫টির মতো ট্যুরিস্টবোট সুবলংয়ের দিকে ছেড়ে গেছে। যদিও স্বাভাবিক সময়ে ঈদের মৌসুমে প্রতিদিন ২৫০-৩০০টি ট্যুরিস্ট বোট ছেড়ে যেত।
অপরদিকে ঝুলন্ত সেতুটি খুলে দেয়ার পরই খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে। টানা চারমাস অলস সময় কাটানোর পর মৌসুমি ফল বিক্রেতা, ট্যুরিস্ট বোটচালক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাই স্বস্তিতে কাজে ফিরেছেন।
সেতুতে প্রবেশের টিকিট বিক্রেতা বলেন, টানা তিনমাস ২৭ দিন এই সেতুটিতে পর্যটন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। সোমবার সেতুতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়েছে। বিকাল থেকে আমরা টিকেট বিক্রয় শুরু করেছি। করোনা সময়কালীন হিসেবে প্রথম দিনেই আমরা তুলনামূলক ভালোই সাড়া পেয়েছি। তবে মাস্ক ছাড়া সেতুতে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। এছাড়া স্প্রের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই সরকারের নির্দেশনায় ১৮ মার্চ থেকে ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশসহ রাঙামাটির সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ছিল। তবে এরই মধ্যে কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ অনেক জায়গায় পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি পালনে কড়াকড়ি আরোপ করেই পর্যটন ঝুলন্ত সেতুটি খুলে দেয়া। চারমাস সেতুটি বন্ধের কারণে নিজস্ব পর্যটন মোটেলেও কোনো বুকিং পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, চারমাসের প্রতি মাসেই কমপক্ষে আমাদের ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চারমাসে এই ক্ষতির পরিমাণ কোটির টাকার কাছাকাছি। এখন আশা করছি, কিছু বুকিংও পাবো।
স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, আমরা সেতুতে কাউকে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। ভেতরে প্রবেশের পরও মাস্ক পরে থাকার জন্য কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
এদিকে কাপ্তাই নেভী হল পিকনিক স্পটে কড়াকড়ি নির্দেশনা বলবৎ রেখেছে । কোন পর্যাটক জীবতলী ,কাপ্তাই নেভীর পিকনিক স্পটে বিধি নিষেধ রয়েছে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে । কোভিড-১৯ স্বাভাবিক না আসা পর্যন্ত কাপ্তাই কোন পর্যাটক খুলবে না বলে জানা গেছে ।